আওয়াবিন নামাজের ফজিলত ও গুরুত্ব

এই পোস্টির মাধ্যমে আওয়াবিন নামাজের ফজিলত সম্পর্কে আলোচনা করা হবে, মুসলমানদের জন্য সবচেয়ে উত্তম এবাদত হচ্ছে ফরজ এবাদতগুলো, ফরজ ইবাদাত গুলো অন্য সব ইবাদতের থেকে অনেক উত্তম। ফরজ ইবাদত গুলো আদায় করার পরে যারা নফল সুন্নত ওয়াজিব এবাদত গুলো আদায় করে তাদের জন্য রয়েছে আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে অনেক বড় পুরস্কার। নফল ইবাদত গুলোর মাধ্যমে আল্লাহ তাআলার নৈকট্য ও সন্তুষ্টি অর্জন করা যায়।

 ফরজ  সুন্নত ও ওয়াজিব নামাজ গুলোর পরে নফল নামাজের গুরুত্ব সবচেয়ে বেশি, আওয়াবিন নামাজ হচ্ছে গুরুত্বপূর্ণ একটি  নফল নামাজ। আল্লাহ তাআলা জিন ও ইনসানকে সৃষ্টি করেছে তার ইবাদত করার জন্য যারা তার ইবাদত করবে তারা হচ্ছে  শ্রেষ্ঠ। ইবাদতের মধ্যে সর্বোত্তম ইবাদত হল নামাজ। ফরজ নামাজের পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ নামাজ হচ্ছে নফল সুন্নত ওয়াজিব নামাজগুলো। আর আওয়াবিন নামাজ হচ্ছে নফল নামাজ।

 আওয়াবিন নামাজের ফজিলত সমূহ 

 হযরত মুহাম্মদ ইবনে আম্মার রাযিআল্লাহু তা’আলা আনহু হতে বর্ণিত তিনি বলেন আমি আমার পিতাকে দেখেছি মাগরিবের পর দুই রাকাত আওয়াবিন নামাজ পড়তেন, এবং তিনি বলতেন আমি আমার প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে দেখেছি তিনি মাগরিবের পর ছয় রাকাত আওয়াবিন নামাজ পড়তেন। হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন যে ব্যক্তি মাগরিবের পর ছয় রাকাত আওয়াবিন নামাজ পড়বেন আল্লাহতালা তার সমস্ত গুনাহ ক্ষমা করে দিবেন যদিও তা সমুদ্রের প্যানা পরিমাণ হয়।

 হযরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু হতে বর্ণিত তিনি বলেন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি মাগরিবের পরে ছয় রাকাত আওয়াবিন নামাজ পড়বে, আর যদি মাঝখানে কোন দোনিয়বি কথা না বলে, তাহলে তা ১২ বছর ইবাদতের সমপরিমাণ বলে গণ্য হবে।

 হযরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহা হতে বর্ণিত তিনি বলেন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি মাগরিবের পরে ২০ রাকাত নফল নামাজ পড়বে আল্লাহ তা’আলা তার জন্য বেহেশতে একটি ঘর বানাবেন অর্থাৎ সে বেহেশতে প্রবেশ করবে।

 হযরত হাসান বসরী রাহমাতুল্লাহি আলাইহি বলতেন  মাগরিব এবং এশা এর মধ্যবর্তী সময়ের নামাজ রাতের নামাজ বা তাহাজ্জুদের নামাজ বলে গণ্য হবে। আওয়াবিন নামাজ ও অন্যান্য নফল নামাজে দীর্ঘ কেরাত দীর্ঘ রুকু এবং দীর্ঘ সেজদা করা   উত্তম। আল্লাহ তাআলা আমাদের প্রত্যেককে মাগরিবের পরে আওয়াবিন নামাজ পড়ার তৌফিক দান করুন, আওয়াবিন নামাজের ফজিলত বুঝে আমল করার তৌফিক দান করুন। আমিন

 আওয়াবিনের নামাজ কত রাকাত পড়া উত্তম 

 প্রতিদিন মাগরিবের পরে মাগরিবের দুই রাকাত সুন্নত আদায় করার পর কমপক্ষে দুই রাকাত থেকে ২০ রাকাত পর্যন্ত আওয়াবিনের নামাজ পড়া যায়। তবে উত্তম হচ্ছে কমপক্ষে ছয় রাকাত আওয়াবীনের নামাজ পড়া। আওয়াবিনের নামাজ পড়ার নিয়ম হচ্ছে দুই রাকাত দুই রাকাত করে ছয় রাকাত পড়া। যেকোনো সূরা দিয়ে আওয়াবিনের নামাজ পড়া যায়।  অন্যান্য সুন্নত ওয়াজিব নফল নামাজের মত প্রত্যেক রাকাতে সূরা ফাতেহা পড়ে তার সাথে যে কোন একটা সূরা মিলাতে হবে।

 প্রত্যেক মুসলমানের উচিত ফরজ ইবাদত গুলোর পাশাপাশি কিছু নফল ইবাদত করা আর নফল ইবাদত গুলোর মাধ্যমে আল্লাহ  তায়ালার নকট্য অর্জন করা যায়, তেমনিভাবে আওয়াবিন নামাজের ফজিলত অনেক বেশি আওয়াবিন নামাজ হচ্ছে  একটা নফল ইবাদত আর এই নফল ইবাদতের মাধ্যমে আল্লাহ তা’আলা অনেক খুশি হন, তাই আমাদের প্রত্যেকের উচিত প্রতিদিন মাগরিবের পর আওয়াবিনের নামাজ পড়া।

 আল্লাহ তায়ালা প্রত্যেক মুসলমান নর-নারীকে ফরজ নামাজ আদায় করার পাশাপাশি নফল ইবাদত  গুলো আদায় করার তৌফিক দান করেন বিশেষ করে প্রতিদিন মাগরিবের পরে কমপক্ষে ছয় রাকাত আওয়াবিন নামাজ পড়ার তৌফিক দান করেন আমরা সকলে চেষ্টা করব প্রতিদিন মাগরিবের নামাজের পরে দুনিয়াবী কোন কথাবার্তা না বলে ছয় রাকাত আওয়াবীনের নামাজ পড়ার দুই রাকাত দুই রাকাত করে তিন সালামে মোট ছয় রাকাত নামাজ

 আল্লাহ তায়ালা আমাদের সবাইকে  আওয়াবিন নামাজের ফজিলত সম্পর্কে জেনে শুনে আমল করার তৌফিক দান করুন  আমিন

 আরো পড়ুন >> বিপদের সময় দোয়া ইউনুস এর আমল

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *