সুচিপত্র
- 1 রাসূল সাঃ এর প্রিয় খাবার
- 2 রাসূল সাঃ এর প্রিয় খাবার
- 3 ১. খেজুর (খেজুর হচ্ছে রাসূল সাঃ এর প্রিয় বাবার মধ্যে অন্যতম)
- 4 ২. ঘি মাখানো রুটি
- 5 ৩. মধু (মধু রাসূল সাঃ এর প্রিয় খাবার)
- 6 ৪. ডালিম (আনার)
- 7 ৫. জলপাই (জায়তুন)
- 8 ৬. ডুমুর ( আনজির/ত্বীন)
- 9 ৭. তরমুজ এবং শসা
- 10 ৮. দুধ
- 11 ৯. লাউ
- 12 ১০. খাসির পায়ের অংশ
- 13 ইতিকথা
- 14 Share Now:
রাসূল সাঃ মানবজাতির মুক্তির পথপ্রদর্শক হিসেবে আবির্ভূত হয়েছিলেন। নিজ উম্মতের জন্য কোনটা ভালো আর কোনটা মন্দ তা বাছাই করে দিয়েছেন। উম্মতের জন্য আর কোনো নবী-রাসূল এতটা চিন্তিত ছিলেন না, যতটা ছিলেন হযরত মুহাম্মদ সাঃ। তিনি যা করতেন তা-ই ছিল কল্যাণকর। তাই তো মহান রাব্বুল আলামীন রাসূল সাঃ -এর করা সকল কাজকে মানবজাতির জন্য সুন্নাত বিধান করে দিয়েছেন। উম্মতের সকল বিষয়ের সাথে খাবার-দাবারের ব্যাপারেও মহানবী সাঃ ছিলেন সচেতন। তিনি যা আহার করতেন, রাসূল সাঃ এর প্রিয় খাবার যেগুলো ছিল, আধুনিক বিজ্ঞান সেই খাবারগুলোর উপকারিতাও প্রমাণ করতে পেরেছে।
অর্থাৎ, রাসূল সাঃ এর খাওয়া প্রিয় খাবারগুলো ছিল অন্যান্য খাবারগুলোর তুলনায় অধিক পুষ্টিগুণ ও উপকারী গুণ সম্পন্ন। রাসূল সাঃ এর প্রিয় ১০ টি খাবার সম্পর্কে জেনে নিন এবং তা খাওয়ার মাধ্যমে সুন্নাত পালন করুন। সেই সাথে খাবারগুলোর পুষ্টি গুণাগুণও গ্রহণ করুন।
রাসূল সাঃ এর প্রিয় খাবার
রাসূল সাঃ এর যুগে আরবে রুটি, খেজুর, দুধ, উট ও দুম্বার গোশত খাওয়ার প্রচলন বেশি ছিল। এখনও এই খাবারগুলো আরবের মানুষ সহ সারাবিশ্বের মুসলমানরা খেয়ে থাকে।
কিন্তু কোন খাবারগুলো প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাঃ এর প্রিয় ছিল, তা জানে না অধিকাংশ উম্মত। তাই তারা বঞ্চিত হচ্ছে সহজ কিছু সুন্নাত পালন করা থেকে। ইহকাল ও পরকালে সফল হতে চাইলে হযরত মুহাম্মদ সাঃ এর দেখানো পথ অবলম্বন করা ছাড়া আর কোনো পথ নেই। রাসূল সাঃ এর কোনো কাজকে অস্বীকার করা মানে স্বয়ং রাসূলকেই অবমাননা করা। যা অনেক বড় গোনাহ।
গোনাহ থেকে বাঁচতে অবশ্যই আমাদেরকে রাসূল সাঃ এর করা কাজগুলো অনুসরণ করা। তেমনই তাঁর খাওয়া খাবারগুলো সম্পর্কেও জানা উচিত।
সবাইকে জানাতে এখানে রাসূল সাঃ এর সবচেয়ে প্রিয় ১০ টি খাবারের কথা আলোচনা করা হয়েছে।
রাসূল সাঃ এর প্রিয় খাবার
মিষ্টিজাতীয় খাবারই রাসূল সাঃ বেশি পছন্দ করতেন। এর বাইরেও কিছু খাবার খেতে পছন্দ করতেন। এখানে সেরকম ১০ টি খাবার উল্লেখ করা হলো:
১. খেজুর (খেজুর হচ্ছে রাসূল সাঃ এর প্রিয় বাবার মধ্যে অন্যতম)

আরবে খেজুর উৎপাদন হয় বেশি তা আমরা সবাই জানি। অতীতকাল থেকে আরবে খেজুর নিত্যকার খাবারে পরিণত হয়েছে। খেজুরের কথা কুরআন ও হাদিসে উল্লেখ আছে। রাসূল সাঃ খেজুর খুব পছন্দ করতেন। তিনি প্রতি বেলার খাবারে খেজুর খেতেন। রাসূল সাঃ বলেছেন- ” যার ঘরে খাবার হিসেবে খেজুর নেই, তার ঘরে ঠিকমতো খাবারই নেই।”
রুটির সাথে খেজুর খেতে তিনি খুব পছন্দ করতেন। বিশেষ করে আজওয়া খেজুর। খেজুরের ফজিলত সম্পর্কে রাসূল সাঃ বলেছেন, ” কেউ যদি সকালে খালি পেটে আজওয়া খেজুর খায়, তাহলে সারাদিন সে বিষক্রিয়া ও জাদুটোনা থেকে মুক্ত থাকবে।”
সুতরাং বোঝা যায় তিনি খেজুর কতটা পছন্দ করতেন। খেজুর একটি বরকতময় খাবার বলে তিনি বারবার সাহাবিদের বলেছেন।
খেজুরের উপকারিতা সম্পর্কে জানতে পড়ুন – আজওয়া খেজুর ও অন্যান্য খেজুরের উপকারিতা: ইসলামিক দৃষ্টিকোণ ও আধুনিক বিজ্ঞান কী বলে?
২. ঘি মাখানো রুটি

নিয়মিত রুটি খেলেও রাসূল সাঃ রুটির সাথে আরও কয়েকটি পার্শ্ব খাবার খেতে পছন্দ করতেন। তার একটি ছিল রুটির সাথে খেজুর। আরেকটি ছিল ঘি-তে ভেজানো রুটি। ঘি-এর মধ্যে রুটি ভিজিয়ে রেখে সেই রুটি তিনি খেতে পছন্দ করতেন। ইবনে মাজাহ শরিফের একটি হাদিসে উল্লেখ আছে আব্দুল্লাহ ইবনে ওমার (রাঃ) বলেছেন, ” একদিন সাহাবিদের সামনে রাসূল সাঃ বলেছিলেন, আমাদের কাছে যদি বাদামি গম দিয়ে তৈরি রুটি এবং সেই রুটি ঘি-এর মধ্যে ডুবানো থাকতো, তাহলে তা খেতে পারতাম।”
ঘি-এর স্বাস্থ্য উপকারিতা অনেক। এই ঘটনা থেকে বোঝা যায়, রাসূল সাঃ এর খাওয়া খাবার যেগুলো ছিল সবগুলোই মানবদেহের জন্য উপকারী।
৩. মধু (মধু রাসূল সাঃ এর প্রিয় খাবার)

মধুকে প্রাকৃতিক খাবার বলা হয়, যা স্বাস্থ্য উপকারিতা অসংখ্য। প্রিয় নবী সাঃ মিষ্টি খাবার বেশি পছন্দ করতেন। মধু ছিল সেসব মিষ্টি খাবারগুলোর মধ্যে প্রথম। রাসূল সাঃ মধুকে উত্তম প্রাকৃতিক ওষুধ বলেছেন। যে খাবারের মধ্যে কোনো ভেজাল নেই। বিভিন্ন রোগের মহা ঔষধ হলো মধু। স্বয়ং আয়েশা (রাঃ) বলেছেন, রাসূল সাঃ মধু খেতে খুব পছন্দ করতেন।
৪. ডালিম (আনার)

ফলের মধ্যে ডালিম ছিল তাঁর পছন্দের একটি ফল। ডালিম খাওয়ার ফজিলত হিসেবে তিনি বলেছেন, ” ডালিম খেলে তা ৪০ দিন পর্যন্ত শয়তান ও বদনজর থেকে দূরে রাখে।”
৫. জলপাই (জায়তুন)

পবিত্র কুরআনের সূরা আত-ত্বীন -এ জলপাইয়ের কথা বলা হয়েছে। রাসূল সাঃ জলপাই খেতে ও গায়ে জলপাইয়ের তেল ব্যবহার করতে বলেছেন। কারণ তা বরকতময় গাছ থেকে পাওয়া যায়।
জলপাইয়ের পুষ্টিগুণও অনেক। ত্বক ও চুলের সুরক্ষায় জলপাই ও এর তেল গুরুত্বপূর্ণ উপকরণ।
৬. ডুমুর ( আনজির/ত্বীন)

এই ফলের নামে একটা সূরা-ই নাজিল হয়েছে। সূরা আত-ত্বীন, যা আনজির ফল। আর বাংলায় ডুমুর ফল। এটাকে বলা হয় স্বর্গীয় ফল। আল্লাহ্ এই ফলের উপর শপথ করে সূরা ত্বীন নাজিল করেছেন। পাকস্থলি ও হাড় সুস্থ রাখতে ফলটি অনেক উপকারী বলে হাদিসেও এসেছে।
মহানবী সাঃ-ও এই ফলটি খেতে উম্মতকে উৎসাহিত করেছেন।
৭. তরমুজ এবং শসা

শরীর ঠাণ্ডা রাখে তরমুজ। রাসূল সাঃ এর স্ত্রী হযরত আয়েশা (রাঃ) বলেন, – ” রাসূল সাঃ তরমুজের সাথে তাজা ও পাকা খেজুর (রাতাব) খেতেন।”
অন্য এক হাদিসে জানা যায়, আব্দুল্লাহ ইবনে জাফর (রাঃ) বলেছেন, -” আমি দেখেছি যে রাসূল সাঃ শসার সাথে তাজা ও পাকা খেজুর ( রাতাব) খেতেন।”
৮. দুধ

দুধ ছিল রাসূল সাঃ এর প্রিয় পানীয়। পবিত্র মিরাজে গিয়ে বায়তুল মাকদিস থেকে যখন রাসূল সাঃ নামাজ পড়ে বের হন, তখন হযরত জিবরাঈল (আঃ) নবী সাঃ-কে পানীয় পান করাতে দুধ ও শরাবের পাত্র সামনে এনে দেন। দুটোর মধ্যে থেকে রাসূল সাঃ দুধকে বেছে নেন।
তা দেখে জিবরাঈল (আঃ) তখন হযরত মুহাম্মদ সাঃ-কে বলেছিলেন, -” ইয়া রাসূলুল্লাহ্, আপনি উত্তম ও বিশুদ্ধ বস্তুই বেছে নিয়েছেন।”
৯. লাউ

একাধিক হাদিস থেকে জানা যায় রাসূল সাঃ লাউ খেতে ভালোবাসতেন। একদিন এক ব্যক্তির দাওয়াতে রাসূল সাঃ গিয়েছিলেন। দাওয়াতে খাবারের পাতে রুটি, গোশত ও লাউয়ের তরকারি রাসূল সাঃ এর সামনে পরিবেশন করা হয়। রাসূল সাঃ সেখান থেকে লাউয়ের তরকারির লাউ বেছে নিয়ে খেয়েছেন বলে আনাস (রাঃ) এর বরাতে এক হাদিস থেকে জানা যায়।
১০. খাসির পায়ের অংশ

হযরত আয়েশা (রাঃ) এর কাছ থেকে জানা যায়, তিনি বলেছেন, -” কুরবানির সময় খাসির মাংস খাওয়ার পর খাসির পায়াগুলো (পায়ের অংশ) রেখে দিতাম। তা যখন রান্না করতাম, রাসূল সাঃ তা ১৫ দিন পরেও খেতেন।”
উপরে বলা ১০ টি খাবারের কথা বিভিন্ন হাদিস থেকে পাওয়া যায়। যে খাবারগুলো রাসূল সাঃ খেয়েছেন, সাহাবিরাও তাঁর দেখাদেখি সেই খাবারগুলো নিশ্চিন্তে খেতেন এবং অন্যদেরকেও জানাতেন।
আধুনিক বিজ্ঞান থেকেও প্রমাণ পাওয়া যায় যে, রাসূল সাঃ যেসব খাবার খেতে বলেছেন, সবগুলোই মানুষের জন্য উপকারী।
ইতিকথা
উম্মতের জন্য ক্ষতির কারণ হতে পারে এমন কোনো কিছুই রাসূল সাঃ করতেন না। তিনি সবসময় তাঁর উম্মতের কথা ভেবেছেন। এমনকি কোন খাবারগুলো খেলে কোনো ক্ষতি হবে না, তা-ও তিনি বলে গিয়েছেন। উপরিউক্ত ১০ টি খাবার ছাড়াও আরও কয়েকটি খাবার যেমন- মাখন, কিশমিশ, আঙুরও তিনি পছন্দ করতেন বলে হাদিসগ্রন্থে জানা যায়।
কেউ যদি এই খাবারগুলো খায়, তাহলে সে একটি সুন্নাত আদায় করার সওয়াব পাবে। কারণ, রাসূল সাঃ এর দেখানো ও পালন করা সকল কিছু আমল করাই ফজিলতপূর্ণ।
প্রত্যেক মুসলমানের উচিত মানবজাতির শ্রেষ্ঠ আদর্শ হযরত মুহাম্মদ সাঃ এর অন্যান্য কাজ অনুসরণ করার পাশাপাশি রাসূল সাঃ এর প্রিয় খাবার গুলো খাওয়া।
 FOjilot Of Surah Islamic website
FOjilot Of Surah Islamic website


 
						
 
						
