সুচিপত্র
- 1 পৃথিবীতে ইসলামের আগমন এর কখন সূত্রপাত হয়
- 2 পৃথিবীতে ইসলামের আগমনের মূল ব্যক্তি মুহাম্মদ সাঃ
- 3 পৃথিবীতে ইসলামের আগমনের মূল মাধ্যম হলো হযরত মুহাম্মদ সাঃ এর নবুয়ত প্রাপ্তি
- 4 নবী মুহাম্মদ সাঃ মক্কা বাসীদের কাছ থেকে আল আমিন উপাধি পেয়েছেন
- 5 মক্কা নগরীর অলিতে গলিতে নবী মুহাম্মদ সাঃ এর দশ বছর ইসলাম প্রচার
- 6 নবী মুহাম্মদ সাঃ এর হিজরতের সময় সফর সঙ্গী ছিলেন আবু বকর রাঃ
- 7 বদরের যোদ্ধা এটি মুসলমানদের প্রথম যুদ্ধ
- 8 বদরের যুদ্ধের ফলাফল
- 9 ওহুদের যুদ্ধ মুসলমানদের দ্বিতীয় যুদ্ধ
- 10 Share Now:
পৃথিবীতে ইসলামের আগমন কি করে ঘটেছিল কখন ইসলাম ধর্ম আসছে কি করে আসছে কার মাধ্যমে আসছে এ-সব বিষয় নিয়ে অনেকের মনে প্রশ্ন অনেকে এ-সব বিষয় জানার জন্য গুগলে সার্চ করেন তাদের জন্য এই পোস্ট টা।
পৃথিবীতে ইসলামের আগমন এর কখন সূত্রপাত হয়
অনেক ইতিহাসবিদ স্বীকার করেন, সপ্তম খ্রিস্টাব্দে মক্কা ও মদীনা থেকে পৃথিবীতে ইসলামের আগমন শুরু হয়। ইসলাম শুরু হয় হযরত আদম আলাই সাল্লাম অর্থাৎ যিনি পৃথিবীর প্রথম মানব তার থেকে। হযরত আদম থেকে শুরু করে একের পর এক নবী ইসলাম প্রচারের ধারা অব্যাহত রাখেন, হযরত আদম আ: ইসলামের দাওয়াত দেন হযরত মূসা আ: ইসলামের দাওয়াত দেন হযরত ইসমাইল আ: ইসলামের দাওয়াত দেন এমনিভাবে পৃথিবীর শুরু থেকে মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পর্যন্ত সকল নবী রাসুলরা ইসলামের দাওয়াত দিয়েছিলেন।
সর্বশেষ নবী হিসেবে হযরত মুহাম্মদ সাঃ ইসলামের দাওয়াত দিয়ে মধ্যযুগের জাহেলীয় বর্বরতা থেকে ফিরে এনে মানুষদেরকে ইসলামের আলোয় আলো কিত করেন। তৎকালে মধ্যে যুগের মানুষরা অনেক জাহেল ও বরবর ছিল, তারা আগুনের পূজা করত মূর্তি পূজা করত, এমন কি তারা তাদের কন্যা সন্তানকে জীবিত দাফন করে ফেলত, তারা মনে করত কন্যার পিতা হওয়া মানে অপমানিত হওয়া সমাজের সবার চোখে খারাপ হওয়া তাই তারা কন্যা সন্তানের পিতা হওয়াকে পছন্দ করতেন না।

পৃথিবীতে ইসলামের আগমনের মূল ব্যক্তি মুহাম্মদ সাঃ
নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম এর পরিচয়, উপনাম ছিলেন আবুল কাশেম, পিতার নাম ছিলেন আব্দুল্লাহ বিন আব্দুল মোত্তালিব, মাতার নাম চিলেন আমেনা বিনতে ওহাব, দাদার নাম ছিল আব্দুল মুত্তালিব বিন হাসেম, দাদি ছিলেন ফাতেমা বিনতে আমর। নানার নাম ছিলেন ওহাব বিন আবদে মানাব। নানীর নাম ছিলেন বোররা বিনতে ওজমা, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জন্মগ্রহণ করেন মক্কা নগরীতে বর্তমান সৌদি আরবে, গোত্র হচ্ছে কোরাইশ গোত্র আর বংশ হচ্ছে হাশিমি বংশ ।
হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জন্মগ্রহণ করার আগেই তার পিতা ইন্তেকাল করেন তিনি এতিম হয়ে পৃথিবীতে জন্ম গ্রহণ করেছেন। মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মাতা এবং দাদা হাতে বড় হন, মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শিশু থাকা অবস্থায় তার মা আমেনা ও ইন্তেকাল করেন তিনি পিতা-মাতাহীন এতিম ছিলেন। তারপর থেকে দাদা আব্দুল মুত্তালিব তাকে লালন পালন করে বড় করেন। মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ছোটবেলা থেকেই ছিলেন অনেক নম্র ভদ্র
পৃথিবীতে ইসলামের আগমনের মূল মাধ্যম হলো হযরত মুহাম্মদ সাঃ এর নবুয়ত প্রাপ্তি
মানবতার মুক্তির দূত হযরত মুহাম্মদ সাঃ ৫৭০ খ্রিস্টাব্দে জন্ম গ্রহন করেন, হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ৪০ বছর বয়সে নবুওয়াত লাভ করেন হযরত মোহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম এর উপরে হেরা গুহায় কোরআন নাজিল হতে লাগলো। তখন হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম তার প্রিয় বিবি হযরত খাদিজা রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহুকে এ বিষয় সম্পর্কে অবগত করলেন। তখন খাদিজা বুঝতে পারলেন তার প্রিয় স্বামীর উপর আল্লাহতালার আশীর্বাদ নাযিল হচ্ছে। যখন নবীজি মক্কার সকল লোকদেরকে ইসলামের পথে আহবান করতে শুরু করলেন তখন মক্কার গণ্যমান্য লোকেরা রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ওপর আক্রমণ শুরু করতে লাগলেন তারা হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম কে পাগল বলে আখ্যা দিলেন। সবাইকে নবী সাল্লাল্লাহু ইসলাম থেকে দূরে থাকতে বলতে লাগলেন সবাই বলতে লাগলেন মোহাম্মদ পাগল হয়ে গিয়েছে তারা তাদের বাপ দাদার ধর্ম ত্যাগ করে কেউ মুহাম্মাদের ধর্ম গ্রহণ করবে না তারা মূর্তি পূজা ছাড়বে না তারা এক আল্লাহর উপর ঈমান আনবে না
নবী মুহাম্মদ সাঃ মক্কা বাসীদের কাছ থেকে আল আমিন উপাধি পেয়েছেন
যতদিন পর্যন্ত নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মক্কাবাসীদেরকে ইসলামের প্রতি আহবান করেননি ততদিন পর্যন্ত মক্কা বাসীরা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে অনেক পছন্দ করতেন সবাই তাকে আলামিন বলে ডাকতেন সবাই তাকে তাদের দামি আমানত গুলো নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম এর কাছে রাখতেন। কারণ সবাই নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম কে বিশ্বাস করতেন সকলের বিশ্বাস নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে তাদের মূল্যবান জিনিস নিরাপদ থাকবে নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কখনো তাদের আমানতের খেয়ানত করবেন না। এই ধারণা থেকে সকালে তাদের মূল্যবান জিনিসগুলো নির্দ্বিধায় মোহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকটে রাখতেন
যখন থেকে মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদেরকে ইসলামের দাওয়াত দিতে শুরু করলেন তাদেরকে তাদের মূর্তি পূজা ছেড়ে দিতে বললেন এক আল্লার প্রতি ঈমান আনবে বললেন ইসলামের বিধি বিধান গুলা তাদের কাছে যখন পেশ করলেন তখন তারা মেনে নিতে চাচ্ছে না। তারা বলতে লাগলো মোহাম্ম পাগল হয়ে গিয়েছে মোহাম্মদ তার বাপ দাদার ধর্মকে ত্যাগ করে নতুন ধর্মে আবিষ্কার করতেছে সুতরাং কেউ মোহাম্মদের আশেপাশের যাবেন না।
মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মক্কার বিভিন্ন অলিতে-বলিতে গিয়ে সকলের কাছে ইসলামের দাওয়াত দিতে লাগলেন কেউ মোহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কথা শুনলেন না রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তায়েফ গিয়েও ইসলামের দাওয়াত দিলেন তখন তায়েবের লোকেরা হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ওপর পার্থর নিক্ষেপ করে রক্তাক্ত করে ফেললেন, তারপরও রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদেরকে বদ দোয়া করেননি, বরং রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম বললেন আমি যদি তাদেরকে বদ দোয়া করি তাহলে পুরা তায়েব বাসিরা ধ্বংস হয়ে যাবে। একদিন না একদিন এই তায়েব বাসিদের থেকে যারা আসবে তারা ইসলাম গ্রহণ করবে বলে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম তাদেরকে বদ দোয়া না দিয়ে তাদের জন্য দোয়া করলেন
মক্কা নগরীর অলিতে গলিতে নবী মুহাম্মদ সাঃ এর দশ বছর ইসলাম প্রচার
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মক্কার অলিতে গলিতে মানুষের ধারে গিয়ে গিয়ে দীর্ঘ ১০ বছর যাবত ইসলাম প্রচার করছিলেন কিন্তু মক্কা বাসীরা তেও রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দাওয়াত কবুল করেননি মুষ্টিময় কয়েকজন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কথা সারা দিয়ে ইসলামের ছায়ায় আলোকিত হলেন তার মধ্যে হযরত আবু বকর রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু এবং হযরত খাদিজা রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহা ছিলেন অপরদিকে চাচা আবু তালেবের ইন্তেকালের পর মক্কার কাফেররা মোহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তার সাথী সঙ্গীদের ওপর আক্রমণ করতে শুরু করলেন আবু লাহাব ধীরে ধীরে তাদের আক্রমণের মাত্রা বাড়াচ্ছিলেন আবু লাহাব এবং আবু লাহাবের লোকেরা নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে এবং নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথী সঙ্গীদেরকে পৃথিবীতে থেকে চির বিদায় করে দেওয়ার জন্য পরামর্শ বসলেন পরামর্শের মধ্যে সবাই বিভিন্ন মতামত দিতে লাগলেন কিভাবে মোহাম্মদ এবং মোহাম্মদ এর সাথি সঙ্গীদেরকে পৃথিবীতে থেকে নিশ্চিহ্ন করে দেওয়া যায় সে বিষয়ে সারা বিশ্বের মধ্যে কাফেরদের লিডাররা একজন এক এক মতামত প্রকাশ করতে লাগলো এদিকে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এবং রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাথি সঙ্গীরা মক্কা থেকে মদিনা হিযরত করার জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করতে লাগলেন যেহেতু নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম এর নিকট মক্কার কাফেরদের আমানত ছিলেন তাই নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হযরত আলীকে কাফেরদের আমানত গুলো বুঝিয়ে দিয়ে হিজরতের জন্য বের হয়ে গেলেন।

নবী মুহাম্মদ সাঃ এর হিজরতের সময় সফর সঙ্গী ছিলেন আবু বকর রাঃ
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজের বিছানায় হযরত আলীকে শোয়াই দিয়ে তিনি বের হয়ে গেলেন তিনি আবু বকরের বাড়িতে গিয়ে দরজা নক করলেন সাথে সাথে আবু বকর দরজা খুলে বললেন লাব্বাইক ইয়া রসুল আল্লাহ ইয়া রাসূলাল্লাহ। তখন রাসূল সাঃ আবু বকর কে বললেন হে আবু বকর তুমি কি ঘুমাওনি তখন আবু বকর বললেন হে আল্লাহর রাসূল আপনি যে দিন হিজরতে বের হওয়ার কথা আমাকে বললেন আমি সে দিন থেকে আর ঘুমাইনি। সাথে সাথে আবু বকর এবং রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কিছু জিনিসপত্র নিয়ে বের হয়ে গেলেন।
এদিকে মক্কার কাফেররা দলবল নিয়ে মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম ও আবু বকরকে খুঁজতে লাগলেন ইতিমধ্যে আবু জাহেল ঘোষণা করে দিলেন যারা আবু বক্কর এবং মুহাম্মদের মাথা এনে দিতে পারবে তাদেরকে বড় ধরনের পুরস্কৃত করা হবে। তাই মক্কার সকল কাফেররা আবু বকর এবং হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাই সালাম কে খুজতে লাগলেন এদিকে রাসুল সাঃ আবু বকর রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু রওয়ান হয়ে গেলেন তারা পথের মধ্যে সাওর গুহায় আশ্রয় নিলেন কাফেররা সব জায়গায় তাদেরকে খুঁজতে লাগলেন খুঁজতে খুঁজতে অনেক কাফের সাওয়ার পর্বতে চলে আসলেন এদিকে আবু বকর অনেক ভয় পেয়ে গেলেন আবু বকর রাসুল সাঃ কে বলতে বলতে লাগলেন। হে আল্লাহর নবী আমরা ধরা পড়ে গেছি কাফেররা আমাদেরকে দেখে ফেলবে তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আবু বকরকে বললেন হে আবু বকর তুমি ভয় পেয়ো না আল্লাহ আমাদের সাথে আছেন
কিছুক্ষণ পর কাফেররা ধীরে ধীরে চলে যেতে লাগলেন তখন হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু ইসলাম ও আবু বকর রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু একটু নিশ্চিত হলেন ধরা না খাওয়ার। এদিকে হযরত আবু বকর রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহুর পায়ে সাপে কামড় দিলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু ওয়া সাল্লাম এর থুতুর মোজেজায় সাপের বিষ আর আবু বকর রাঃ কোন ক্ষতি করতে পারল না গুহার মুখে মাকড়সা এসে জাল বুনে দিয়ে গেছে আর কাফেররা ভালো করে লক্ষ্য করে নাই তারা মনে করছে এটা অনেক পুরাতন গুহা তাই কেউ আর গুহার দিকে নজর দেয়নি।
ধীরে ধীরে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও হযরত আবু বকর মক্কা থেকে মদিনায় পৌঁছে গেলেন মদিনা বাসিরা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে অনেক সুন্দর করে গ্রহণ করে নিলেন তারা। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দাওয়াতে ধীরে ধীরে সকলে ইসলাম গ্রহণ করতে লাগবেন মদিনায় ইসলামের সফলতা দিন দিন বৃদ্ধি পেতে লাগলো মদিনা বাসিরা সকলে মক্কা বাসদের তুলনায় অনেক ভালো ছিল মক্কার কাফেররা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম কে মারার জন্য অপেক্ষায় ছিলেন আর অপরদিকে মদিনা বাসীরা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম কে গ্রহন করে নিলেন।

বদরের যোদ্ধা এটি মুসলমানদের প্রথম যুদ্ধ
মদিনায় ধীরে ধীরে মুসলমানদের প্রচার প্রসার বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে মক্কার কুরাইশরা মুসলমানদের ক্ষতি করার জন্য বিভিন্ন ষড়যন্ত্র করতে লাগলো। আর মক্কার কোরাইশরা মদিনা অতিক্রম করে সিরিয়াতে গিয়ে ব্যবসা-বাণিজ্য করেন তারা মুসলমানদের ক্ষতি করার জন্য সিরিয়া থেকে সম্পদ ও সরঞ্জাম জোগাড় করা শুরু করে, মক্কার একটি বড় কাফেলা সিরিয়া থেকে মুসলমানদের ক্ষতি করার জন্য সম্পদ সরঞ্জাম নিয়ে বাড়ি ফিরছিল,কোরাইশদের এই বিশাল কাফেলার সম্পদের একটা অংশ ছিল মক্কার মুসলমানদের থেকে লুটপাট করা সম্পদ। এই কাফেলার খবর যখন মদিনার আসলো তখন মদিনার মুসলমানরা এই কাফেলা কে আক্রমণ করার সিদ্ধান্ত নেই যেহেতু তাদের সম্পদ লুটপাট করে নিয়ে গেছে
।নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তিনশত নয়জন সাহাবী কে নিয়ে রওয়ানা হয় কাফেলা কে আক্রমণ করার জন্য। মুসলিমরা ভাবছিল যদি এ কাপালাকে পরাস্ত করা যায় তাহলে তারা আর মদিনার আক্রমণ করার সাহস করেবে না, কিন্তু কাফেলার দলের নেতা আবু সুফিয়ান মুসলমানদের আক্রমণের কথা জেনে যায়, হে মুসলমানদের আক্রমণের কথা উল্লেখ করে সাহায্য চেয়ে মক্কায় চিঠি পাঠায়। অপরদিকে সে নিরাপদ রাস্তা বেছে নিয়ে মক্কার দিকে রওনা হন।
আবু সুফিয়ানের চিঠি পেয়ে মক্কার কাফেররা এক হাজার সৈন্য একশত ঘোড়া সাতশো উট নিয়ে এবং যুদ্ধের সরঞ্জাম জোগাড় করে মুসলমানদেরকে পরস্র করার জন্য মদিনার দিকে রওনা দিলো। এদিকে মুসলমানরা সংবাদ পেলে যে মক্কা থেকে বিশাল বড় এক সৈন্য বহর নিয়ে মুসলমানদেরকে আক্রমণ করার জন্য রওয়ানা হয়েছে, মুসলমানরা মোটেই প্রস্তুত ছিল না যুদ্ধ করার জন্য। এদিকে ভিন্ন রাস্তা দিয়ে আবু সুফিয়ান মক্কা পৌঁছে যায়, মক্কা বাহিনীকে ফিরে আসার জন্য বার্তা বাহক প্রেরণ করে। তবে মক্কার কাফেরদের লিডাররা বেবি ছিল এটাই সুযোগ মুসলমানদের একেবারে ধূলিসাৎ করে দেওয়ার, তাই তারা না পিরে যুদ্ধ করার জন্য চলে যায়।
এদিকে মুসলমানদের অবস্থা খুবই খারাপ তাদের মোকাবেলা করার জন্য যথেষ্ট সৈন্য ও সরঞ্জামও ছিল না কিন্তু তারা তারপরও মোকাবেলা করার জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করলেন, মুসলমানরা ৩১৩ জন সৈন্য নিয়ে বদর নামক উপত্যকা এসে শিবির স্থাপন করলে এবং শত্রুদের জন্য অপেক্ষা করতে লাগলো , অপরদিকে মক্কার কাফেররা এসে উপত্যকার উপর দিকে শিবির স্থাপন করলো, পরের দিন সকালে উভয় বাহিনী বদরের প্রান্তরে মুখোমুখি হল, একদিকে মাত্র 313 জন মুসলমান সৈন্যরা জীর্ণশীর্ণ অস্ত্রবিহীন, অপরদিকে এক হাজার মক্কার কাফের বাহিনী, যারা ছিল অস্ত্রশস্ত্র গোড়া উট সবকিছুতে পরিপূর্ণ, তুমুল যুদ্ধ শুরু হয়ে গেল একপর্যায়ে খবর আসলো কাফেরদের দলনেতা আবু জাহেল নিহত হল, কাফেরেরা খুব ভেঙ্গে পড়ে গেল পরিস্থিতি খুব খারাপ, কিছুক্ষণ পর আবার খবর আসলো কাফেরদের আরেক বড় দলের নেতাও নিহত হয়ে গেল, কাফেরদের সৈন্যদের অবস্থা খুবই খারাপ হয়ে গেল তাদের মনোবল একেবারে হেরে গেল তারা পিছু হটতে শুরু করল যুদ্ধ থেকে পালাতে শুরু করল, মুসলমানরা যতটুকু সম্ভব তাদেরকে ধাওয়া করলো এবং তাদের ক্ষতি করার চেষ্টা করল।
বদরের যুদ্ধের ফলাফল
যদিও মক্কা বাহিনী মুসলমানদের থেকে অনেক গুণ বড় ছিল তারপরও তারা মুসলমানদের কাছে হেরে গেল। মক্কা বাহিরের 70 জন নিহত হলো এবং ৭০ জনকে বন্দি করা হলো।
অপরদিকে মুসলমানরা মাত্র 313 জন সৈন্য নিয়ে মক্কার এত বিশাল বড় একটা বাহিনীকে ধ্বংস করে দিল এবং বিজয় লাভ করল মুসলমান বাহিনীর ১৪ জন শহিদ হন। আল্লাহতালা মুসলমানদেরকে বিশাল বড় একটা বিজয় দান করছেন, বদরের যুদ্ধে বিজয়ের পর মুসলমানদের চারিদিকে সুনাম ছড়িয়ে পড়লো আস্তে আস্তে মানুষ মুসলমান হতে লাগলো দলে দলে মানুষ ইসলাম গ্রহণ করতে লাগলো

ওহুদের যুদ্ধ মুসলমানদের দ্বিতীয় যুদ্ধ
বদরের যুদ্ধের ঠিক এক বছর পরে অহুদ নামক প্রান্তরে এই যুদ্ধটি সংঘটিত হয় সেজন্য এক যুদ্ধকে ওহুদের যুদ্ধ নামের নামকরণ করা হয়েছে। মক্কার কাফেররা বদরের যুদ্ধে পরাজিত হওয়ার পর তাদের মধ্যে যে সমস্ত নেতারা জীবিত ছিল তারা প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য মুসলমানদেরকে আক্রমণ করার পরিকল্পনা করতেছিল।মক্কার কাফেররা তিন হাজারের বেশি সৈন্য এবং ২০০ টি গোড়া ও ৩০০০ উট এবং যুদ্ধের সরঞ্জাম নিয়ে মদিনার দিকে রওনা হল
অপরদিকের মুসলমানদের মাত্র ১ হাজার তার মধ্যে কিছু পথ আসার পরে আব্দুল্লাহ ইবনে উবাই তার অনুসারি ৩০০জনকে নিয়ে চলে গেল, এখন মুসলমানদের সংখ্যা হয়ে গেল মাত্র 700 জন। এই সাতশ জন সৈন্য নিয়ে মুসলমানরা অহুদ প্রান্তরের দিকে রওনা হল।
ওহুদ প্রান্তরে তুমুল যুদ্ধ শুরু হয়ে গেল কাফেরদের সাথে তুমুল লড়াইয়ের ফলে ছত্রভঙ্গ করে দিল মুসলমানরা। কাফেররা অনেকে কিছু করতে লাগলো অনেক কাফের নিহত হলো
অপরদিকে ওহুদের প্রান্তরে ছোট একটি পাহাড়ের উপর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম ৫০ জনকে সেখানে দিয়েছিলেন, এবং বলেছিলেন যত কিছু হয়ে যাক না কেন তোমরা এখান থেকে সরবা না, কিন্তু যুদ্ধ যখন মুসলমানরা বিজয় হওয়ার উপক্রম হয়ে গেল কাফেররা যখন পালায় যেতে লাগলো, তখন যাদেরকে পাহারো উপরে দিয়েছিল তারা গনিমতের মাল সংগ্রহ করার জন্য, পাহাড় থেকে নেমে গেলেন। অপরদিকে কাফেররা পিছন থেকে এসে মুসলমানের উপর হামলা শুরু করল। এতে মুসলমানরা অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হলো মুসলমানদেরকে ছত্রভঙ্গ করে দিল যে যুদ্ধে মুসলমানরা বিজয়ী নিশ্চিত ছিল সে যুদ্ধে মুসলমানরা পরাজিত হলো। এই যুদ্ধের সত্তর জন সাহাবীর শাহাদাত বরণ করেন তাদের সকলকে ওহুদ প্রান্তরে দাফন করেন।
ওহুদ যুদ্ধ থেকে মুসলমানদের শিক্ষা নেওয়া বিষয় হলো যে আমিরের আদেশ সব সময় মেনে চলা। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর আদেশ তারা মেনে চলেন নাই সেজন্য তারা পরাজিত হয়েছেন। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ৫০ জনকে পাহাড়ের উপরে দিয়ে বলছিলেন যে যাই হোক না কেন তোমরা এখান থেকে নামবে না। কিন্তু তারা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কথা ভুলে গিয়ে তারা পাহাড় থেকে নেমে গেলেন। আর কাফেররা এই সুযোগ দেখে পিছন থেকে আক্রমণ করে মুসলমানদেরকে পরাজিত করে দিল
আরো পড়ুন >> বিপদের সময় দোয়া ইউনুস এর আমল