আজ এই পোস্টে আলোচনা করা হবে ইশরাকের নামাজের ফজিলত । ইশরাকের নামাজ বা সালাতুল ইশরাক এটি হচ্ছে একটি নফল নামাজ, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সব সময় ইশরাকের নামাজ পড়তেন, এবং সাহাবীরা ও ইশরাকের নামাজ পড়তেন, আল্লাহ তাআলার ফরজ বিধানগুলো পালন করার পর,সুন্নত ওয়াজিব নফল গুলো পালন করা জরুরী এতে অনেক ফায়দা রয়েছে।
হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মেরাজের রাত্রে উদ্যোগমনে গিয়েছেন তখন আল্লাহ তা’আলা হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে হাদিয়া হিসেবে ৫০ ওয়াক্ত নামাজ দেন হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার বান্দাদের সুবিধার্থে আল্লাহর কাছ থেকে পঞ্চাশ ওয়াক্ত নামাজের পরিবর্তে পাঁচ ওয়াক্ত করে আনেন যাতে বান্দারা পরিপূর্ণভাবে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ঠিকমতো আদায় করতে পারে নামাজ হচ্ছে আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে সরাসরি একটি ইবাদত যা আল্লাহ তাআলা হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মাধ্যমে বান্দাদের জন্য পাঠিয়েছেন।
পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ হচ্ছে ফরজ নামাজ যেগুলোর জন্য আল্লাহ তাআলার কাছে জবাবদিহিতা করতে হবে এবং প্রত্যেক মুসলমানের উচিত পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ঠিকমতে মসজিদে গিয়ে জামাতের শহীদ আদায় করা, না হলে তার জন্য শাস্তি ভোগ করতে হবে আর নারীদের জন্য ঘরের মধ্যে সময় মতে সঠিকভাবে নামাজ আদায় করা উত্তম।
পাঁচ ওয়াক্ত ফরজ নামাজগুলো হচ্ছে ফজর জোহর আসর মাগরিব ও এশা এ ফরজ গুলোর পাশাপাশি ওয়াজিব সুন্নত ও নফল নামাজগুলো ও রয়েছে, নফল নামাজ গুলোর মধ্যে কিছু গুরুত্বপূর্ণ নামাজ হলো তাহাজ্জতের নামাজ আওয়াবিনের নামাজ চাশতের নামাজ ইশরাকের নামাজ আজকে আমি আপনাদের সামনে ইশরাকের নামাজের ফজিলত সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব আপনারা সকলে গুরুত্ব দিয়ে পোস্টটি পড়তে থাকুন।
ইশরাকের নামাজ কখন পড়তে হবে।
ইশরাক অর্থ হলো আলোকিত হওয়া উজ্জ্বল হওয়া বা সূর্য উদিত হওয়ার পরে এই নামাজ পড়তে হয়, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সূর্য ওঠার সঙ্গে সঙ্গে এই নামাজ পড়তাম না কিছুক্ষণ অপেক্ষা করতেন তারপর এই নামাজ পড়তেন। ইশরাকের নামাজ পড়ার সময় নিয়ে কেউ কেউ বলেছেন সূর্য ওঠার ১০ থেকে ১৫ মিনিট পর এই নামাজ পড়া উত্তম আবার অনেকে বলেছেন, সূর্য উঠার ২০ থেকে ২৫ মিনিট পর এই নামাজ পড়া উত্তম। আর এশরাকের নামাজ পড়ার শেষ সময় হল , সূর্য এক বর্শা পরিমাণ মধ্য আকাশে উদিত হওয়া পর্যন্ত ইশরাকের নামাজ পড়া যায় এক বর্শা সমান হল দেড় মিটারের মত।
ইশরাকের নামাজের ফজিলত
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন যে ব্যক্তি ফজরের নামাজ জামাতের সাথে আদায় করল, অতঃপর সূর্য উঠা পর্যন্ত সেখানে বসে আল্লাহ তাআলার জিকির-আজকার করতে থাকলো, এবং সূর্য ওঠার পর দাঁড়িয়ে দুই রাকাত নামাজ পড়লো, সে ব্যক্তি একটি হজ ও একটি ওমরা পালনের চাওয়াব নিয়ে বাড়িতে ফিরে গেল। আবু উমামাহ রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু থেকে বর্ণিত তিনি বলেন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, এক নামাজের পর আরেক নামাজ দুই নামাজের মধ্যখানে যদি কোন কোন গুনা না হয়ে থাকে তা হচ্ছে ইল্লিউন (অর্থাৎ উচ্চ মর্যাদা সম্পন্ন)
ইসরাকের নামাজ পড়ার নিয়ম।
ইসরাকের নামাজ অন্য অন্য নফল নামাজের মত দুই রাকাত দুই রাকাত করে পড়তে হয়। ইসরাকের নামাজের জন্য আলাদা কোন নিয়ম পদ্ধতি নাই। ইশরাকের নামাজের সুনির্দিষ্ট কোন রাকাতের সংখ্যা নাই, কিছু কিছু আলেমগণ বলেছেন ইসরাকের নামাজ দুই রাকাত দুই রাকাত করে মোট 12 রাকাত পর্যন্ত পড়া যায়। তবে রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দুই রাকাত দুই রাকাত করে মোট চার রাকাত ইশরাকের নামাজ পড়তেন।
সুতরাং সকল মুসলিম নারী পুরুষের উচিত প্রতিদিন নিয়মিতভাবে কমপক্ষে চার রাকাত ইশারাকের নামাজ পড়া কেননা এই নামাজের অনেক ফজিলত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সব সময় নিজেও পড়তেন এবং অন্যদেরকেও পরতো বলতেন আল্লাহ তাআলা আমাদের সকল মুসলিম নারী পুরুষদেরকে ইসরাকের নামাজ পড়ার তৌফিক দান করুন আমিন।