জানাজা নামাজের ফজিলত ও দোয়া সমূহ

এক পোস্টের মাধ্যমে আমি বিস্তারিতভাবে আলোচনা করব জানাজা নামাজের ফজিলত সমূহ । জানাজার নামাজ হলো বিশেষ একটি দোয়া , যা কোন মুসলমান মৃত ব্যক্তিকে কবর দেওয়ার আগে পড়া হয়। জানাজার নামাজ হলো ফরজে কেফায়া, অর্থাৎ সমাজের যেকোনো একজন এ জানাজা আদায় করে দিলে বাকি সবাই এর গুনাহ হতে বেঁচে যাবে আর যদি কেউ আদায় না করে তাহলে সবাই গুনাগার হবে। 

জানাজা নামাজ একজন ইমামের নেতৃত্ব হয়, সবাই দলবদ্ধভাবে কাতার সোজা করে ইমামের পিছনে দাঁড়াবে, জানাযা নামাজে অংশগ্রহণকারীরা বেজোড় সংখ্যা কাতারে সারিবদ্ধ হয়ে দাঁড়াবে, জানাজার নামাজে চার তাকবীর, দাঁড়িয়ে নামাজ আদায় করতে হয় এখানে কোন রুকু বা সেজদা নাই, মোনাজাত ও নাই, জানাজার নামাজ মানে দোয়া মৃত ব্যক্তির জন্য। এখানে মোনাজাতের কোন প্রয়োজন নাই মোনাজাত করা বিদআত, কারণ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও সাহাবীরা জানাজার নামাজের পরে কখনো মোনাজাত করেন নাই এটা সুস্পষ্ট হাদিস দ্বারা প্রমাণিত, তাই জানাজা নামাজের পরে মোনাজাত করা  বিদাত মোনাজাত করা যাবে মৃত ব্যক্তিকে কবর দেওয়ার পরে। জানাজার নামাজ মৃত ব্যক্তির আত্মার মাগফেরাতের জন্য করা হয়। জানাজার নামাজ শুধুমাত্র পুরুষদের জন্য নারীরা জানাজার নামাজ পড়তে পারবে না জানাজার নামাজ পড়ার জন্য পবিত্রতা অর্জন করতে হবে। 

জানাজা নামাজের ফজিলত 

হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন যে ব্যক্তি কোন মৃত ব্যক্তর জানাজার মধ্যে অংশগ্রহণ করবে সে এক কিরাত পরিমাণ সওয়াব পাবে, আর যে ব্যক্তি কোন মৃতের জানাজা অংশগ্রহণ করে এবং তার দাফনও শরিক হবে  তাহলে সে দুই কিরাত পরিমাণ সওয়াব পাবে। এক সাহাবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে প্রশ্ন করলেন হে নবী কিরাত মানে কি তখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম বললেন এক কিরাত মানে অহুদ পাহাড় পরিমাণ সাওয়াব অর্থাৎ যে ব্যক্তি কোন মৃতের জানাজা অংশগ্রহণ করবে সে ওহুদ পাহাড় পরিমাণ চাওয়াব পাবে আর যে ব্যক্তি কোন মৃতের জানাজায় অংশগ্রহণ করার পর তার দাফনের মধ্যেও শরিক হবে তাহলে সে দুইটা ওহুদ পাহাড় পরিমাণ সাওয়াব পাবে সুবহানাল্লাহ। 

জানাজার নামাজ পড়ার নিয়ম 

জানাজার নামাজ পড়ার নিয়ম হল মৃত ব্যক্তিকে কেবলার দিকে করে রাখবে এবং ইমাম সাহেব তার বক্ষ বরাবর দাঁড়াবে এবং নিয়ত করবে নিয়ত মনে মনে করলে আদায় হয়ে যাবে, মুখে করার কোন প্রয়োজন নেই,  মুখে উচ্চারণ করে করলেও সমস্যা নাই। সকলে নিয়ত করার পরে ইমামের সাথে আল্লাহু আকবার বলে হাত কান পর্যন্ত তুলবে  হাত নাভির নিচে বাঁধবে। তারপরে সানা পড়বে নামাজের মত করে তবে একটু বেশকম আছে “ওয়া তা’আলা জাদ্দুকার পরে “ওয়া জাল্লা সানাউকা” এটা অতিরিক্ত যুক্ত করবে। তারপর ইমাম যখন দ্বিতীয় তাকবীর বলবে আল্লাহু আকবার বলে। তখন সবাই মুখে আল্লাহু আকবর বলবে  হাত যেভাবে বাঁধা আছে সেভাবে থাকবে,  তারপর দরুদে ইব্রাহিম পড়বে নামাজে যেভাবে দরুদে ইব্রাহিম পড়া হয় সেম ওই দরুদ ইব্রাহিমটা পড়বে, তারপর তিন নাম্বার তাকবির দিবে, মুক্তাদিরা ও ঈমানের সাথে সাথে আল্লাহু আকবার বলবে হাত যেভাবে আছে সেভাবে থাকবে, তারপর মৃত ব্যক্তির জন্য দোয়া করবে অর্থাৎ  জানাজার মূল দোয়া যেটিকে জানাযার দোয়া বলা হয়। তারপর চতুর্থ তাকবীর দিবে এবং সালাম ফিরাবে। 

জানাযায়ী অংশগ্রহণ করা মৃতের হক 

হযরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু হতে বর্ণিত তিনি বলেন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন। এক মুসলমানের উপর অন্য মুসলমান ব্যক্তির ছয়টি হক রয়েছে। 

এক. যখন একে অপরের সাথে দেখা হয় তখন সালাম দেওয়া। দুই. কোন মুসলমান ডাকলে সেই ডাকে সাড়া দেওয়া। তিন. কোন মুসলমান যদি সৎ পরামর্শ চায় তাহলে তাকে শত পরামর্শ দেওয়া। চার. কোন মুসলমান যদি হাসি দিয়ে আলহামদুলিল্লাহ বলে আলহামদুলিল্লাহ জবাবে ইয়ারহামুকাল্লাহা বলা।পাঁচ. কোন মুসলমান অসুস্থ হয়ে গেলে তার সেবা যত্ন করা এবং তাকে দেখতে যাওয়া। ছয়. কোন মুসলমান মারা গেলে তার জানাজায়  অংশগ্রহণ কর । 

 আল্লাতালা যেন আমাদের সকলকে এই বিশাল বড় সওয়াবের ভাগীদার হওয়ার তৌফিক দান করেন আমীন 

আরো পড়ুন >>  চাশতের নামাজের ফজিলত ও উপকারিতা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *